শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৪ ১৪৩১
|| ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
নানা প্রতিকূলতায় চলতি মওসুমে কুল জাতের বড়ইয়ের ফলন কম হয়েছে। তবে বর্তমানে কুলের বাজার দরে খুশি চাষিরা। নাটোরের স্বসাদু মিষ্টি এই কুলের খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। ফলে গ্রামের মোকামগুলোতে বলসুন্দরী, কাশমেরী, আপেলকুল, বাউকুল-ভারতসুন্দরীর চাহিদা বেশ। মৌসুমি এসব বড়ই উৎপাদন ও বিপনন ঘিরে জেলার ছয় উপজেলায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য কুল আড়ত। এর মধ্যে সবচেয়ে বড়কুলের আড়তটি বসে গুরুদাসপুরের নাজিরপুরে। দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকার, ফরিয়া ব্যাপারীরা এখানকার কুল কিনে বিক্রি করছেন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, কুলের দাম ভালো হওয়ায় ধারাবাহিকভাবে লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। এ কারণে গত তিন বছরে ৩৩৬ হেক্টর থেকে বেড়ে ৩৫০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে কুলচাষ।
হিসেব মতে, ২২ সালে জেলাজুড়ে ৩৩৬ হেক্টরে কুল উৎপাদন হয় ৫ হাজার ১৫৭ মেট্রিকটন, পরের বছর ৩৩১ হেক্টরে ৫ হাজার ২৪৮ মেট্রিকটন কুল বড়ই উৎপাদন হয়। চলতি মওসুমে বড়াইগ্রামে ১২৫ হেক্টর, নাটোর সদরে ৫৫, সিংড়ায় ৩২, লালপুরে ৮০, বাগাতিপাড়ায় ৫, নলডাঙ্গায় ৬ এবং গুরুদাসপুর উপজেলায় ৪৭ হেক্টর মিলিয়ে ৩৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের কুল চাষ হয়েছে। এবছর ফলন কম হলেও আগের তুলানায় উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগ।
চাষিরা জানালেন, বাগানের গাছে গাছে ঝুলছে বাহারি রঙের কুল বড়ই। কুলে যেমন রয়েছে আকার ও রংয়ের ভিন্নতা। বলসুন্দরী, কাশমেরী, আপেলকুল, বাউকুল-ভারতসুন্দরী জাতের কুলের স্বাদে রয়েছে ভিন্নতা। আকার আর মান ভেদে দামেও রয়েছে কমবেশি। গুরুদাসপুরের কুলচাষি শরিফুল ইত্তেফাককে বলেন, দুই বছর হলো তিনি কুল চাষে নেমেছেন। চলতি মওসুমে তার ৪ বিঘা জমিতে কুলের আবাদ রয়েছে। অন্যের জমি লিজ নিয়ে ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে বেশ কয়েকটি জাতের কুলচাষ করেছেন। গত বছর তার বাগানের গাছ থেকে প্রথম ফলন পান। সে বছর আবহাওয়া অনুকূলে তাকায় ফলন হয়েছিল আশানুরূপ। কিন্তু দাম কম থাকায় কোনমতে খরচ উঠেছিল। কিন্তু চলতি মওসুমে কুলের ফলন কম হয়েছে। তবে মান ভেদে মণপ্রতি ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা পযর্ন্ত কুল বিক্রি করছেন তিনি।
বড়াইগ্রাম, সিংড়া, বাগাতিপাড়ার অন্তত দশজন কুলচাষি ইত্তেফাককে জানান, নাটোরের কুলের খ্যাতি রয়েছে সারা দেশে। কুলের ফলন কম হলেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকার ফরিয়ারা গ্রামের আড়ত থেকে কুল কিনছেন। এ বছর দাম বেশি হওয়ায় প্রতি বিঘায় ১লাখ থেকে ১ লাখ ৫০হাজার টাকা বিক্রির আশা করছেন তারা। এতে খরচ বাদেও বিঘায় চাষিদের লাভ হবে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। কুলের পাইকার আমিরুল ইসলাম, জীবন মন্ডলসহ বেশ কয়েকজন জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কুল চাষ হলেও নাটোরের কুল দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি খেতেও সুস্বাদু। ফলে সারাদেশে এখানকার কুলের ব্যাপক কদর রয়েছে। তাই কুল মওসুম এলেই তারা নাটোর থেকে কুল কিনে দেশের অভ্যন্তরে বিক্রি করেন।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুল ওয়াদুদ ইত্তেফাককে জানান, এই আবাদে সাফল্য আসায় উন্নত জাতের কুল চাষে দিন দিন আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। প্রতি বছরই বাড়ছে নতুন চাষি। চাষীদের সময়পযোগী পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। এবার ফলন কম হলেও প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দাম পাচ্ছেন চাষিরা।
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়