বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||
বৈশাখ ২৫ ১৪৩১
|| ০১ জ্বিলকদ ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০১৯
১৯ বছর ধরে বিনা বেতনে শিক্ষার্র্থীদের পাঠদান করে আসছেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের আলীপুর দাখিল মাদরাসার ১৭ শিক্ষক-কর্মচারী। এমপিও ভূক্ত না হওয়ায় তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন । সর্বশেষ আশায় ছিলো চলতি বছরে হয়তোবা এমপিও ভুক্তি হবে। কিন্তু এমপিও ভুক্তির তালিকায় বের হলেও সেই তালিকায় তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম নেই। ফলে হতাশায় ডুবছেন কর্মরত ১৭ শিক্ষক-কর্মচারীর পরিবার।
মাদরাসা সূত্রে জানাযায়, ১৯৬৭ সালে উপজেলা সদর হতে ২৪ কি.মি পশ্চিমে আহম্মেদপুর-বড়াইগ্রাম সড়ক সংলগ্ন আলীপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয় এ মাদরাসাটি। তৎকালীন সময়ের মরহুম আলহাজ্ব আব্দুল কাদের মুন্সি ও তার ছোট ভাই মরহুম ইব্রাহীম আধাম এলাকার অবহেলিত মানুষদের ধর্মীয় শিক্ষার কথা চিন্তা করে সমাজকে সু-শিক্ষিত করে দেশের উন্নয়নে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে নিজেদের এক একর জমির ওপর মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন সকালে ফোরকানীয়া পাঠদান করানো হতো। পরে এবতেদায়ী খুলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান শুরু হয়। খুরিয়ে খুরিয়ে চলতে চলতে ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। এর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এলে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ¦ অধ্যাপক আব্দুল ক্দ্দুুস এমপির সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি আবার চালু হয়।
বর্তমানে ওই মাদরাসায় ১৭ জন শিক্ষক-কর্মচারী ২৭০জন শিক্ষার্থীদের সরকারের সকল নিয়মনীতি অনুসারোন করে পাঠদান করাচ্ছেন এবং প্রতি বছরই সন্তোষ জনক ফলাফল অর্জন করে আসছেন।
আলীপুর দাখিল মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সুপার মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, দীর্ঘ ২৪ বছর যাবৎ আমরা ১৭ জন শিক্ষক-শিক্ষীকা বিনা বেতনে মাদরাসার শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে আসছি। আমাদের অনেক আশা ছিলো চলতি বছর সবার সাথে আমাদেরটাও এমপিও ভুক্তি হবে। কিন্তু চলতি বছরেও আমাদের প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত হলো না। আর কতদিন এভাবে বিনা বেতনে পাঠদান করাবো। আমাদের সংসার তো আর চলে না। ভেবেই পাচ্ছি না এখন আমরা কি করবো।
১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়। তারপর স্থানীয় সাংসদ সদস্য আলহাজ¦ অধ্যাপক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস এমপি স্যারের সার্বিক সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি ২০০১ সালে দাখিল পাঠ দানের অনুমোতি পায়। ২০০১ সালে টিআর প্রকল্প থেকে একটি অনুদান দিয়ে মাদরাসটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন স্থানীয় সাংসদ এবং আমাদের নিজেদের নিরলস পরিশ্রমে আমরা প্রতিষ্ঠানটিতে বিনা বেতনে পাঠ দান করাচ্ছি। সরকার নন এমপিও প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্তির জন্য গত বছর আগষ্ট মাসে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন পক্রিয়া শুরু করার পর পরই আমরা আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এমপিও ভুক্ত হয়নি।
গুরুদাসুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘ দিন যাবৎ আলীপুর দাখিল মাদরাসার শিক্ষক কর্মচারিগণ বিনা বেতনে সরকারের সকল নিতিমালা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে আসছেন। প্রতিবছরই সন্তোষ জনক ফলাফল লাভ করে। এই প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত না হওয়ার কারনে শিক্ষক-কর্মচারীরা এখন হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান ও চাপিলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল করিম মিয়া বলেন, আমি দীর্ঘ দিন যাবৎ এই মাদরাসার সাথে সম্পৃক্ত আছি। বিগত দিনে আমাদের প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্ত হয়নি। এ বছরেও হলো না। আমি আশা করবো আগামী তালিকায় অবশ্যই এই মাদরাসাটি এমপিও ভুক্ত করা হবে।
এইচ/এ.
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়