বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৪ ১৪৩০
|| ১৮ রমজান ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২২
ভেজালের আশঙ্কা না থাকায় মানুষ কচি তালশাঁস (তালকুর) খুবই পছন্দ করেন। প্রচণ্ড গরমে এ তালশাঁস মানুষের তৃষ্ণা মেটায়। খেতে নরম ও সুস্বাদু হওয়ায় মানুষের এ ফলের প্রতি আগ্রহও যথেষ্ট। ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকায় সব শ্রেণির মানুষকেই তীব্র উৎসাহ নিয়ে তালশাঁস খেতে দেখা যায়।
নাটোরের লালপুরের চংধুপইল ইউনিয়নের বাওড়া গ্রামের বিচ্ছাদ আলীর ছেলে মেজর আলী (৩৭)। গত ১৬ বছর ধরে তালের শাঁস বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন।
গতকাল সোমবার (৩০ মে ২০২২) উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয়ের সামনে তালশাঁস বিক্রি করেন মেজর আলী। তিনি বলেন, একটা তালের মধ্যে ২ থেকে ৩ টা শাঁস থাকে। গড়ে ১০ টাকায় বিক্রি করছেন। চুক্তিতে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় একটি গাছের তাল কেনেন। গাছ থেকে পেরে আনা, বহন করা, কাটাকুটিসহ সব শ্রমই নিজে করেন। বাজারে এনে এসব তাল থেকে শাঁস বিক্রি করেন।
মেজর আলী বলেন, দিনে ২০০ থেকে ২৫০ টি তালেরশাঁস বিক্রি হয়। প্রতিদিন আয় হয় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। একমাত্র মেয়ে যুথিকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে জীবন (৭) ব্র্যাক স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। মহামারি করোনার এই দুর্যোগ সময়ে তালশাঁস বিক্রি করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সংসারে সুখে রয়েছেন। তাল ফুরিয়ে গেলে তখন অন্য পেশাই চলে যান।
লালপুর হাসপাতাল মোড়ে তালশাঁস বিক্রেতা রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৬৫) বলেন, বছরের অন্যান্য সময় দিনমজুরের কাজ করলেও এখন তালের শাস বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, দাম গত বছরে চেয়ে বেশি। এবারে তালের সংকট থাকায় দাম বেড়েছে। প্রতিটি শাস এখন ৫ টাকা দরে একটি তাল ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তালশাঁস ক্রেতা জিল্লুর রহমান বলেন, এই গরমে তালশাঁস খেতে খুবই মজা। ৮টি তাল ৮০ টাকায় কিনে ২২টি তালশাঁস পেয়েছেন। পরিবারের ছোট বাচ্চারাও এটা খুবই পছন্দ করে।
তালশাঁস কিনতে আসা শামিম আহমেদ বলেন, গত বছরের থেকে এবার তালশাঁসের দাম একটু বেশি। গত বছর যে তালের শাস ৩ থেকে ৪ টাকায় কিনেছেন। এবার সেটি ৫ থেকে ৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
শামসুন্নাহার বেগম নামে আরেক ক্রেতা বলেন, তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জীবন। একটু স্বস্তি পেতে তালশাঁস কিনেছেন।
কচুয়া গ্রামের কামরুল ইসলাম বলেন, বাড়িতে পাঁচটি তাল গাছ আছে। কচি তাল প্রতিটি ৭ টাকা দরে হিসেবে বিক্রি করে দিয়েছেন।
উপজেলায় বিভিন্ন বাজার ও মোড়ে ২০/২২ জন এই তালের শাঁস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দুপুরে গরম পড়লে বিক্রি বেশি হয়।
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়