বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১২ ১৪৩১
|| ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ২৫ জুলাই ২০২১
চার বছর অপেক্ষার পর চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই শেষে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের ১৬টি উপজেলার ৬২০ জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সুপারিশ অনুযায়ী স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে তাদেরকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত চলমান লকডাউন শেষে তাদের স্বীকৃতির বিষয়ে গেজেট জারি করা হবে। ২০১৪ সালে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ও সরাসরি আবেদন করেছিলেন প্রায় দেড় লাখ ব্যক্তি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর প্রথম দফায় তাদের মধ্য থেকে এক হাজার ৩৫০ জনকে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ষষ্ঠ দফায় এবার ৬২০ জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারা সবাই প্রথমবারের মতো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হতে যাচ্ছেন। জামুকার ৭৫তম সভায় তাদের স্বীকৃতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সম্প্রতি জামুকার এ সংক্রান্ত কার্যপত্র চূড়ান্ত অনুমোদন করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। স্বীকৃতিপ্রাপ্তদের মধ্যে অনেকে প্রয়াত। মন্ত্রণালয় বলছে, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ব্যক্তির অবর্তমানে তাদের পরিবারের সদস্যরাও মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ সব সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য হবেন। জামুকার ৭৫তম সভার কার্যপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৪ সালে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হয়। তার মধ্য থেকে উপজেলা পর্যায়ে চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ের পর ৩২টি উপজেলার ৮৮২ জনকে 'ক' তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল। এর মধ্যে সুপারিশপ্রাপ্তদের নথি পর্যালোচনা করে জামুকার ৭৫তম সভায় ৩৬১ জনকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া একই তালিকার ২৯১ জনের সুপারিশ নামঞ্জুর এবং অনুপস্থিতসহ অন্যান্য কারণে ১৩০ জনের নাম উপকমিটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত দিয়েছে জামুকা। অন্যদিকে ৪৯টি উপজেলায় যাচাই-বাছাইয়ে গত চার বছরে যাদেরকে 'খ' ও 'গ' তালিকায় অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বাদ দেওয়া হয়েছিল তাদেরকে বিভিন্ন সময়ে আপিলের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এই তালিকায় আপিলকারীর সংখ্যা ছিল দুই হাজার ২০৪। পরে তাদেরকে পুনরায় যাচাই-বাছাই করে জামুকা গঠিত উপকমিটি। ওই কমিটির সুপারিশের আলোকে এবার তাদের মধ্য থেকে ২৫৯ জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত দিয়েছে জামুকা। জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও জামুকার চেয়ারম্যান আ ক ম মোজাম্মেল হক সমকালকে বলেন, যাচাই-বাছাইয়ের পর আমরা প্রায় ৬০০ জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের নামে শিগগিরই গেজেট প্রকাশ করা হবে। গেজেট প্রকাশের পর তারা ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন। একই সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধার চূড়ান্ত তালিকায়ও তাদের নাম প্রকাশ করা হবে। স্বীকৃতিপ্রাপ্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের ২৫৭, সিলেট বিভাগের সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজারের ২২৫, ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও মাদারীপুরের ১০২ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনার ৩৬ জন রয়েছেন। তাদের নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে গেজেটভুক্তির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির জন্য ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইনে ১ লাখ ২৩ হাজার ১৫৪টি এবং সরাসরি ১০ হাজার ৯০০টি আবেদন জমা নেওয়া হয়। পাশাপাশি আবেদনে উপজেলা বা জেলার নাম উল্লেখ করা হয়নি, এমন আবেদনও পাওয়া যায় ৫ হাজার ৫৫৩টি। মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, এ সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। তাদের সবাইকে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ডাকা হয়েছিল। ২০১৭ সালের ২১ জানুয়ারি থেকে দেশের ৪৭০টি উপজেলা, জেলা, মহানগরে কমিটি গঠন করে আবেদনকারী ব্যক্তিদের যাচাই-বাছাই শুরু করা হয়। সেই যাচাই-বাছাইয়ের ধারাবাহিকতায় নতুন করে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মাসে ২০ হাজার টাকা ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন।
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়