রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||
জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১
|| ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২২
রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনকে গণহত্যা স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (২১ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেন ওয়াশিংটনের হলোকস্ট জাদুঘরে এ ঘোষণা দেন। ২০১৮ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত নির্যাতনের ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধন’ অভিহীত করেছিল ওই সময়ের ট্রাম্প প্রশাসন। এর আগে আর্মেনিয়া, বসনিয়া, রুয়ান্ডা, ইরাক, দারফুর এবং আইসিস নিয়ন্ত্রিত কিছু অঞ্চলে গণহত্যা হয়েছিল বলে স্বীকৃতি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
ব্লিনকেন বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গার ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে। যারা সবাই নিজ চোখে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মমতা দেখেছেন বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৬ এবং ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের কাছে শক্ত প্রমাণ আছে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিশেষজ্ঞরা নির্যাতনের ওপর রিপোর্ট দিয়েছেন। যেখানে দেখা গেছে মিয়ানমারের সেনারা হত্যা, ধর্ষণ, গ্রামে অগ্নিসংযোগ এবং নির্যাতন করেছে।’
ব্লিনকেন বলেন, ‘২০১৬ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের কারণে এক লাখ এবং ২০১৭ সালে সাত লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলোদেশে পালিয়ে যায়। এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাদের ইন্টারভিউ করা হয়েছে এবং তাদের তিন-চতুর্থাংশ বলেছে তারা স্বচক্ষে মিলিটারিদের হত্যা করতে দেখেছে। অর্ধেকের বেশি নারী নির্যাতন প্রত্যক্ষ করেছে এবং ২০ শতাংশ জানিয়েছে গণ-নির্যাতনের ঘটনা- অর্থাৎ একটি একক ঘটনায় ১০০ বা তার বেশি মানুষকে হত্যা বা আহত করার ঘটনা তারা দেখেছে।
ব্লিনকেন আরও বলেন, ‘চার সন্তানের মা নুরা সেনাদের কাছে মিনতি করেছিল তাকে যেন সন্তানদের সামনে ধর্ষণ না করা হয়। কিন্তু মিয়ানমারের সেনারা ওই কাজটিই করেছিল। হাসরার ১২ বছরের ছেলের হাত বিছিন্ন করে ফেলেছিল ওরা। এসব প্রমাণ নিশ্চিত করে যে হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নিশ্চিহ্ন করার অভিপ্রায় ছিল মিয়ানমার বাহিনীর।’
জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন এবং ইনডিপেন্ডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমারকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা গাম্বিয়াকে তথ্য সরবরাহ করছি তাদের দায়ের করা মামলায় সহায়তার জন্য। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ না করার জন্য গত জুনে জাতিসংঘে একটি রেজুলেশন পাস হয়। মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার গতমাসে এক রিপোর্টে জানিয়েছে চীন, রাশিয়া এবং সার্বিয়া এখনও মিয়ানমারকে অস্ত্র সরবরাহ করছে।
রোহিঙ্গােদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে ব্লিনকেন বলেন, রোহিঙ্গাদের কোভিড টিকাও দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, একদিন আসবে যখন এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে জবাব দিতে হবে। উল্লেখ্য ২০১৮ সালের প্রথম ভাগে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের সামগ্রিক তদন্ত করার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়।
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়