সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১৬ ১৪৩১
|| ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ১৭ ডিসেম্বর ২০২২
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় এক সময় ব্যাপক কার্পাস তুলা চাষ হতো, তাই এ এলাকার নামকরণ হয়েছে কাপাসিয়া। ইতিহাস বিখ্যাত মসলিন কাপড়ের মূল উপাদান এই কার্পাস তুলার তীর্থ ভূমি ছিল কাপাসিয়া অঞ্চল। নদীবেষ্টিত এলাকাটিতে উৎপাদিত এ তুলার সুতা থেকে তৈরি হতো জগৎবিখ্যাত মসলিন কাপড়।
মসলিন কাপড় উৎপাদন ও বিক্রয়ের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যকেন্দ্র ছিল এ জনপদ। মসলিন তৈরি হতো ‘ফুটিকার্পাস’ নামক গাছের তুলা থেকে। এ তুলার তৈরি কাপড় খুব সূক্ষ্ম, মিহি ও মোলায়েম হয়। ফুটিকার্পাস তুলা থেকে তৈরি অতি মিহি এ কাপড় আরব ও ইউরোপে রপ্তানি হতো।
হাতের আংটির ভেতর দিয়ে প্রবেশ করানো যেত পুরো একটি শাড়ি। আবার আস্ত একটি শাড়ি একটি দেশলাইয়ের বাক্সের মধ্যে দিব্বি রাখা যেত—এসব কথা জানা যায় মসলিন কাপড় নিয়ে। অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে জগৎজোড়া প্রসিদ্ধি ছিল এই মসলিনের। মোগল রাজ দরবারে মসলিনের ব্যাপক সমাদর ছিল। কালের পরিক্রমায় হারিয়ে গেছে সেই মসলিন। হারিয়ে যাওয়া সেই মসলিনকে ফিরিয়ে আনতে কাপাসিয়ায় নতুন করে ১২০ বিঘা জমিতে চাষ করা হচ্ছে ফুটিকার্পাস তুলা।
স্থানীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ. কে. এম গোলাম মোর্শেদ খানের প্রচেষ্টায় কাপাসিয়া উপজেলায় কার্পাস তুলা চাষকে পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের আমরাইদ এলাকায় মফিজুল ইসলামের ‘ফুটিকার্পাস’ বাগান ঘুরে দেখা গেছে বিভিন্ন গাছে ফলন আসতে শুরু করেছে। ২ বিঘা জমিতে প্রায় ১০ হাজার গাছ রয়েছে। কোনো গাছে ফুল আবার কোনো গাছে ফলে ভরপুর পুরো বাগান। নিয়মিত গাছের যত্ন নিচ্ছেন মফিজুল ইসলাম।
মফিজুল ইসলাম জানান, প্রতিটি ফুটিকার্পাস গাছ থেকে ২শ গ্রাম তুলা পাওয়া যায়। চলতি বছর চাষ করা জমি থেকে ২৫-২৭ মণ তুলা পাবেন। এই তুলা তিনি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
তিনি আরও জনান, সার, বীজ, কীটনাশকসহ যাবতীয় খরচ কৃষি অফিস বহন করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া অন্য ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। ভবিষ্যতে এই তুলার চাষ তিনি আরও বাড়াবেন বলে জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ. কে. এম গোলাম মোরশেদ খান বলেন, কাপাসিয়ার নামটি এসেছে মূলত কার্পাস নামক তুলা থেকে। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন, তুলা উন্নয়ন বোর্ড ও চাষিদের সমন্বিত উদ্যোগে কার্পাস তুলা চাষে উপজেলায় অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। অনাবাদি ও পতিত জমিতে তুলা চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা।
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়