শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৫ ১৪৩০
|| ১৯ রমজান ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর ২০১৯
নাটোরের বড়াইগ্রামের নগর বাজারে রুবেল খান ও মৌসুমী খাতুন নামে এক ভূঁয়া চিকিৎসক দম্পতির খপ্পড়ে পড়ে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। পেশায় মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট হলেও ব্যবস্থাপত্র, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট এমনকি ছোটখাটো সার্জারী সবই করেন তারা।
শুধু তাই নয়, রুবেল নিজেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকসহ নানা অসত্য পরিচয় দিয়েও রোগীদের প্রতারিত করে আসছেন। এ দম্পতির অদক্ষ চিকিৎসায় সম্প্রতি উপজেলার থানাইখাড়া গ্রামের মিলন হোসেনের স্ত্রী লাবনী খাতুনের বাচ্চা প্রসবের সময় নবজাতক শিশু কন্যা মারা যাওয়াসহ একাধিক রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রুবেল জেলার লালপুর উপজেলার গোপালপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর তিনি ও তার স্ত্রী একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি (ডিএমএফ) পাশ করেন কিছুদিন বনপাড়ার একটি ক্লিনিকে কাজ করেন। এরপর নগর বাজারে তিনতলা ভবন ভাড়া নিয়ে উপরতলায় বাসা আর অন্য দুটিতে গড়ে তোলেন গ্রাম বাংলা প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র।
চেম্বারে বসিয়েছেন আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন, যা দিয়ে নিজেই আল্ট্রা করেন। কোন প্যাথলজিষ্ট না থাকলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাসহ নিজেই রিপোর্টে স্বাক্ষর করেন। ডেলিভারীসহ মাঝে মাঝেই ছোটখাটো সার্জারী করেন এই দম্পতি। নিয়মানুযায়ী শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার কথা থাকলেও রীতিমত ছাপানো প্যাডে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দেন তারা।
এক্ষেত্রে ব্যবস্থাপত্র ও খামে রুবেল খান নিজেকে বাত, ব্যাথা, মা-শিশু এবং মেডিসিন অভিজ্ঞ ডাক্তার এবং তার স্ত্রী মৌসুমী খাতুন গাইনী ও প্রসূতি রোগে অভিজ্ঞ ডাক্তার হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন। ফেসবুক আইডিতে রুবেল নিজেকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার হিসাবে পরিচয় দেন। একই সঙ্গে তার বিএমএন্ডডিসি রেজিঃ নং লিখেছেন ১২৭৮৯।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই রেজিষ্ট্রেশন নম্বরটি জামালপুরের ডা. মাহবুবুল ইসলামের। এভাবে ভূঁয়া পরিচয় কাজে লাগিয়ে চিকিৎসক না হয়েও প্রতিনিয়ত সাধারণ রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা। পাশাপাশি তাদের অদক্ষ চিকিৎসায় সুস্থতার পরিবর্তে উল্টো নানাবিধ শারীরিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়ছে অজস্র মানুষ।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য সরেজমিনে নগর বাজারে গেলে সাংবাদিক আসার খবর পেয়েই চেম্বার বন্ধ করে আতœগোপন করেন তারা। পরে মোবাইলে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে কোন নিউজ না করার অনুরোধ করেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার পারভেজ জানান, আমি দ্রুত এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এইচ/এ
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়