বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১১ ১৪৩১
|| ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ৬ ডিসেম্বর ২০১৮
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে নাটোরের ছোট তরফ রাজবাড়ী একটি। বর্তমান সরকারের আমলে মেরামত ও সোন্দর্যবর্ধন ও মেরামত করা হয়েছে এ রাজবাড়িটির। বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ একটি প্রকল্পের আওতায় এ স্থানটির শোভাবর্ধন ও মেরামতকাজ সম্পন্ন করে।
জানা যায়, রাজা রামজীবন নাটোর রাজবংশের প্রথম রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন ১৭০৬ কিংবা মতান্তরে ১৭১০ সালে। এভাবে নাটোর রাজবংশের পত্তন হয়। ১৭৩০ সালে রামজীবন মারা যান। ১৭৩০ সালে রানী ভবানীর সাথে রাজা রামজীবনের দত্তক পুত্র রামকান্তের বিয়ে হয়। রাজা রামজীবনের মৃত্যুর পর রামকান্ত নাটোরের রাজা হয়। ১৭৪৮ সালে রাজা রামকান্তের মৃত্যুর পরে নবাব আলীবর্দী খাঁ রাণী ভবানীর ওপর জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেন। বগুড়া জেলার ছাতিনা গ্রামের আত্মরামচৌধুরী ও জয়দূর্গা দেবীর প্রথম কন্যা ছিলেন রানী ভবানী। মাতৃকূলের দিক থেকে তিনি ছিলেন উচ্চ বংশীয়। রানী ভবানী ছিলেন খুব সুন্দরী এবং আধ্যাত্মিক গুনের অধিকারী। তার স্বামীর মৃত্যুর পর অর্ধেক বঙ্গে রাজত্ব করেন। তাই তাকে বলা হত অর্ধ বঙ্গেশ্বরী। রাণী ভবানী একটি ঐতিহাসিক চরিত্র। রাণী ভবানী উদারপন্থী, প্রজাবৎসল জমিদার ছিলেন। জমিদার হিসেবে তার উদারতা ও বদান্যতা ছিল প্রণিধানযোগ্য। রানী ভবানীর একটি মাত্র কন্যাসন্তান ছিল, নাম তারা সুন্দরী। ১৮০২ সালে রানী ভবানীর মৃত্যুর পর তার দত্তকপুত্র রামকৃষ্ণ রাজ্যভার গ্রহণ করেন। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর রাজবাড়ী বড় তরফ ও ছোট তরফ এ দু’ভাগে ভাগ হয়ে যায়।
পরবর্তীতে কালের বিবর্তন রাজা-রাজসভার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেলেও ছোট তরফ প্রাসাদগুলো পড়ে ছিল হারানো কালের স্বাক্ষী হয়ে। অনেকটা ভঙ্গুর হয়ে পড়া প্রাসাদটি অপেক্ষায় ছিল কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবার। কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলে মেরামত ও শোভাবর্ধন করার ফলে প্রাসাদটি বিপন্নবস্থা থেকে আবারও একটি সুরম্য প্রাসাদে রূপান্তরিত হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ 'নাটোর রাজবাড়ী ও উত্তরা গণভবনের মেরামত প্রকল্প' এর আওতায় ২ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ছোট তরফ রাজপ্রাসাদটির মেরামত ও শোভাবর্ধন করে।
এ ব্যাপারে নাটোরের জেলা প্রশাসক বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ছোট তরফ প্রাসাদটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এর মেরামত করার কারণে এটি একটি ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানে পরিণত হবে। বিভিন্ন অঞ্চলের পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হবে।
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়