শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৭ ১৪৩১
|| ১১ শাওয়াল ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি বছর নাটোরে বিভিন্ন জাতের কুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভারত সুন্দরী, কাশ্মীরি, আপেল, থাই ও নারকেল কুলের বাহারি রঙ দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন ক্রেতারা। বিভিন্ন জাতের কুল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বাজারদর ভালো পাওয়ায় চাষীরা লাভবানের পাশাপাশি প্রতিদিন কুল বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ লাখ টাকার।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার ৫ হাজার ২২০ টন কুল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নাটোরের সাত উপজেলার বাগানগুলোয় দেখা মিলছে ভারত সুন্দরী, বল সুন্দরী, কাশ্মীরি, আপেল, থাই, নারকেল কুলসহ অন্তত আট জাতের কুলের। বিঘাপ্রতি ১ লাখ টাকা খরচ করে আয় হচ্ছে আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা। লাভজনক আবাদ হওয়ায় কুল বাগান করে শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। বাহারি রঙ আর স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় ফলের মধ্যে বর্তমানে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে এখানকার কুল।
নাটোর সদর উপজেলার হালসা ইউনিয়নের কুলচাষী শফিউল ইসলাম। উচ্চশিক্ষা নিয়েও এখন পিতার জমিতে গত তিন বছর ধরে করছেন কুল চাষ। করোনার সময় চাকরি চলে যাওয়ার কারণে বাড়িতে চলে আসেন তিনি। এরপর স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তাদের পরামর্শে পাঁচ বিঘা জমিতে কুল চাষ শুরু করেন। তার জমিতে ভারত সুন্দরী এবং কাশ্মীরি কুল দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন অনেকেই।
কুলচাষী শফিউল ইসলাম বলেন, ‘ভারত সুন্দরী কুলটা আগাম হওয়ার কারণে পাইকারি কুল ব্যবসায়ীরা তার জমি থেকেই কুল নিয়ে যাচ্ছেন। তার খরচের চেয়ে এবার অন্তত দুই-আড়াই লাখ টাকা লাভ করবেন।
এছাড়া কুল বাগান পরিচর্যা, উৎপাদন, বাজারজাতসহ বিভিন্ন কাজের সঙ্গে জড়িত থাকায় কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকেরই। লেখাপড়ার পাশাপাশি বাড়তি আয় করছেন শিক্ষার্থীরাও।
এদিকে কুল উৎপাদনকে কেন্দ্র করে জেলার বনপাড়া বাইপাস এলাকায় গড়ে উঠেছে কুলের বড় পাইকারি বাজার। বনপাড়া কুল আড়ত সমিতির সভাপতি শাহাদাত হোসেন জানান, ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২০-২৫ লাখ টাকার কুল কেনাবেচা হচ্ছে এখানে। কিছুদিন পর এ বাজারে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে ২ কোটি টাকার কুল বেচাকেনা হবে।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘নাটোরে চলতি বছর ৩৪৮ হেক্টর জমিতে কুলের চাষ হয়েছে। কুল চাষে চাষীদের সার্বিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। চলতি বছর ৫ হাজার ২২০ টন কুল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা টাকার অংকে ৫২ কোটি ২০ লাখ। তবে পরিকল্পিত উদ্যোগে চাষাবাদ করা গেলে কুলও হতে পারে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাষীদের অন্যতম লাভজনক একটি ফসল।’
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়