শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৭ ১৪৩১
|| ১১ শাওয়াল ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ৬ আগস্ট ২০২২
ঘোড়ার গাড়িতে করে ছেলের বিয়ে হবে এটা ছিল বাবার বহুদিনের শখ। সেই শখ পূরণ করতে শেষ পর্যন্ত ঘোড়ার গাড়িতে করেই বিয়ে করে বউ নিয়ে আসলেন ছেলে আনিসুর রহমান (২৭)।
এমন বিয়ে দেখতে শত শত উৎসক মানুষ ভিড় জমান বিয়ে বাড়িতে। এমনকি সড়কের ধারেও বিয়ে করতে যাওয়া-আসার সময় দাঁড়িয়ে থাকে উৎসুক জনতা।
গতকাল শুক্রবার (০৫ আগস্ট) নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার চকগোয়াশ পূর্বপাড়া গ্রামে এমন ব্যতিক্রমী বিয়ের ঘটনা ঘটে। বর আনিসুর রহমান ওই গ্রামের আমিন উদ্দিনের ছেলে। আর কনে একই উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের জিন্নাত আলীর মেয়ে।
বরের বাবা আমিন উদ্দিন জানান, আগে রাজা-জমিদার এমনকি অনেক সামর্থবান পরিবারের ছেলে-মেয়েদের ঘোড়ার গাড়িতে করে বিয়ে হতো। সিনেমা-নাটকেও ঘোড়ার গাড়িতে করে বিয়ে করার দৃশ্য দেখেছেন। এমন পরিস্থিতিতে তার ছেলের বিয়েটা ঘোড়ার গাড়িতে করে করার ইচ্ছা জাগে তার।
ছেলে যখন খুব ছোট ছিল, তখন থেকেই তার স্বপ্ন ছিল ছেলে বড় হলে ঘোড়ার গাড়িতে করে বিয়ে করাবেন। সেই কথাটি ছেলেকে জানানো হলে তার ইচ্ছে পূরণ করতেই ঘোড়ার গাড়ি ঠিক করা হয়। যেই কথা সেই কাজ। ছেলে বর সেজে ঘোড়ার গাড়িতে করে পাঁচ কিলোমিটার দূরে বাজিতপুর গ্রামে যায় বিয়ে করতে। বিয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ফের ঘোড়ার গাড়িতে করেই বউকে বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। এতে তিনি খুব খুশি হয়েছেন। বহুদিন আগের সেই শখ ছেলে পূরণ করলো।
অনুভূতি ব্যক্ত করে তিনি বলেন, রাজা জমিদারের ছেলের মত তার ছেলেও ঘোড়ার গাড়িতে করে বিয়ে করায় অতীত ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হলো। কারণ সচরাচর এমনভাবে বিয়ে আর হয় না। এখন বাস, মাইক্রো এমনকি হেলিকপ্টারে বিয়ে হয়।
বর আনিসুর রহমান বলেন, বাবার শখ পূরণ করতেই তিনি ঘোড়ার গাড়ি ভাড়া করেছিলেন এবং ওই গাড়িতে করেই বিয়ে করে বউ ঘরে এনেছেন। এতে একদিকে বাবার স্বপ্ন পূরণ হলো, অন্যদিকে অতীত ঐতিহ্যকেও বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হলো। এই সময়ে ব্যতিক্রম আয়োজনে বিয়ে করতে পেরে তিনিও ধন্য। তার জীবনে এটি একটি মাইলফলক ও স্মৃতি হয়ে থাকবে। কারণ এখন আর ঘোড়ার গাড়িতে করে বিয়ে হয় না।
তিনি বলেন, ঘোড়ার গাড়ির স্বল্পতার কারণে শুধু বর-কনের জন্য একটি গাড়ি ভাড়া করা হয়। বরযাত্রীরা মাইক্রোবাসে করে বিয়ে বাড়িতে যান। ঘোড়ার গাড়িতে কনের বাড়িতে যাওয়া-আসার সময় অনেকে তাদের হাত নাড়িয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
ঘোড়ার গাড়ির মালিক মুশফিকুর রহমান বলেন, আগে ঘোড়ার গাড়িতে করে বিয়ে করার রেওয়াজ থাকলেও এখন আর সেই রেওয়াজ নেই। অনেক আগে মাঝে মধ্যে দুই একটি বিয়ের ভাড়া পাওয়া যেত। তবে বাস-মাইক্রোবাস আসার পর আর সেই ভাড়া হয় না, এখন সবাই সেসব যানবাহনে বিয়ে করতে যায়। অনেক বছর পর তিনি এই বিয়ের ভাড়া পেয়েছেন। তাই শখ করে ঘোড়ার গাড়িটিও সুন্দর করে সাজিয়েছেন।
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়