বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৪ ১৪৩১
|| ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০২২
দিনটি ছিল ১৩ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার)। ঘড়ির কাঁটা তখন বেলা সাড়ে ১১টা ছুঁই ছুঁই। এমন সময় নাটোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদের কক্ষে প্রবেশ করলেন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা নবীজান বেগম। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন, ‘আমার থাকার জায়গা নাই, দেখারও কেউ নাই। আমার একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই চাই।’
তার কষ্টের কথা শুনে জেলা প্রশাসক তাকে একটি শাড়ি ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। তবে সেগুলো নিতে নারাজ বৃদ্ধা নবীজান। তার একটাই কথা ‘এগুলো চাই না, শুধু একটা থাকার জায়গা চাই।’
তখন জেলা প্রশাসক বৃদ্ধা নবীজানকে একটি ঘর দেওয়ার আশ্বাস্ত দেন। পরবর্তীতে তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেন জেলা প্রশাসক। সম্প্রতি সেই ঘরে উঠেছেন নবীজান বেগম।
জানা যায়, নবীজান বেগম কানে ভালো শুনতে পান না, চোখেও তেমন দেখতে পান না। জীবনে চলার পথে লাঠিই তার একমাত্র ভরসা। শহরের একটি গাড়ির গ্যারেজের এক কোনায় বসবাস করতেন তিনি। স্বামী হায়দার আলী অনেক আগেই মারা গেছেন। স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র মেয়েকে নিয়ে চরম বিপদে পড়েন নবীজান।
সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে বৃদ্ধা নবীজান বেছে নেন ভিক্ষাবৃত্তি। মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভিক্ষা করে চলতো মা-মেয়ের সংসার। মেয়েকে এক দিনমজুর ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেন তিনি। বিয়ের পর মেয়ে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেন না। মেয়েকে দেখার আশায় আজও বুক বেঁধে আছেন বৃদ্ধা নবীজান। সারাদিন লাঠিতে ভর করে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করে চলে তার জীবন।
বৃদ্ধা নবীজান বেগম বলেন, আমার নিজের কোনো ঘর ছিল না। মানুষের গ্যারেজে থাকতাম। জেলা প্রশাসক স্যার আমাকে পাকা ঘর দিয়েছেন। আমার আর মানুষের জায়গায় থাকতে হবে না। এখন থেকে নতুন ঘরে থাকুম। আল্লাহ স্যারকে ভালো রাখুক।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, বৃদ্ধা নবীজানকে দেখাশোনা করার মতো কেউ নেই। আমরা তাকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘর দেওয়ার চিন্তা করি। সেই প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে তাকে আশ্রয়ণের একটি ঘর দেওয়া হয়েছে। তাকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবারসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেওয়া হবে। তিনি যত দিন বেঁচে থাকবেন তার পাশে জেলা প্রশাসন থাকবে।
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়