বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ৪ ১৪৩১
|| ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল ২০২০
নাটোর জেলায় গত সপ্তাহের চার দিনে আগুনে পুড়ে বিভিন্ন উপজেলার ১৯ টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে নগদ টাকা, আসবাবপত্র, শস্য, কাপড়চোপড়সহ বাড়িঘরের প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে যেমন ধনী লোকের বাড়িও পুড়েছে তেমনি গরীবকেও নিঃস্ব করে দিয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেশি ঘটে থাকে। এসময় কোথাও একবার আগুন লাগলে সেটা নেভানো খুবই দুষ্কর হয়ে পড়ে। যদি এটা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে হয় তবে সেটা আরো ভয়ংকর হয়ে ওঠে। গত চার দিনে যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে এর অধিকাংশই বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে সূচনা।
৪এপ্রিল শনিবার নাটোর শহরের বলাড়িপাড়ায় একটি বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়। বড়াইগ্রাম উপজেলায় ৫এপ্রিল ৮টি বাড়ি পুড়ে নগদ ১ লাখসহ ১২ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়। ৬এপ্রিল সদর উপজেলার কামারদিয়ার গ্রামের দিন মজুরের ২টি বাড়ি পুড়ে যায়। এতে ঐ বাড়ির সর্বস্ব পুড়ে যায় ২ লক্ষাধিক টাকার মালামাল। একই দিনে লালপুর উপজেলার একটি বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে নগদ ৪ লাখ টাকাসহ ৪০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। আবার একই দিনে সিংড়ার নিংগইন এলাকায় কৃষকের ৩টি বাড়ির ৯টি ঘর পুড়ে ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়। ৭ এপ্রিল বাগাতিপাড়ার পাঁকা ইউনিয়নে ৪ টি বাড়ি পুড়ে ক্ষতি হয় প্রায় ৯লাখ টাকার। ঐদিনই নলডাঙ্গার বুড়িরভাগ গ্রামে ৫টি ঘর পুড়ে ৬০ মণ পেঁয়াজসহ বাড়ির সব কিছু পুড়ে যায়।
এতে ক্ষতি হয় প্রায় ৩ লাখ টাকার। ঐ দিনেই লালপুরে আসবাব ও এবি ইউনিয়নে ৪টি বাড়ি অগ্নিকাণ্ডে ৪লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। সবগুলো পরিবারই নিঃস্ব হয়ে খোলা আকাশের নিচে এসে দাঁড়িয়েছে। সরকারি-বেসরকারি সাহায্যে হয়ত সাময়িক দু’একদিন খেয়ে চলতে পারবে তারা। কিন্তু অনাগত দিনগুলোতে বড্ড অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়েছে তাদেরকে। এই বিপুল পরিমাণ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে এক একটা পরিবারের কয়েক যুগ লেগে যাবে ধারণা করা যায়।
ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স এর নাটোর স্টেশনের উপ সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান জানান, এখন শুষ্ক মৌসুম চলছে। এই সময়টাতে অগ্নিকাণ্ড একটু বেশি ঘটে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অগ্নিকাণ্ড ঘটে থাকে অসাবধানতাবশত। এছাড়াও বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কমদামি বৈদ্যুতিক সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে ঘটে থাকে এমন দুর্ঘটনা। এই সময়টাতে বিশেষ করে মার্চ মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত সবাইকে আগুন ব্যবহারে ও এ বিষয়ে অধিক সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সিংড়ার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে গ্যাস সিলিণ্ডার বিস্ফোরণে। তাছাড়া প্রায় সবগুলো অগ্নিকাণ্ডই বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে। আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে বা অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে সর্তকতা কীভাবে অবলম্বন করা যায় এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ‘প্রথমত যাদের সামর্থ্য আছে তাদের বাড়িতে এস্টিংগুইসার রাখা যেতে পারে। বাজারে এর দাম খুব বেশি নয়। আপনার কোটি টাকার সম্পত্তি বাঁচাতে ঘরে একটি করে এক্সটিংগুইশার সিলিণ্ডার রাখতে পারেন। এছাড়াও বাজারে আজকাল ছোট আকারের অর্থাৎ ব্যাগে বহনযোগ্য এক্সটিংগুইশার স্প্রে পাওয়া যায়। সর্বশেষ কথা হচ্ছে সাবধানতা অবলম্বন সবচেয়ে বেশি জরুরী।’
এন/কে
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়