মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১০ ১৪৩১
|| ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ৭ ডিসেম্বর ২০২২
নাটোরে সমতল ভূমিতে কমলা হবে কি না এমন দূশ্চিন্তা ও এক প্রকার চ্যালেঞ্জ নিয়েই কমলা গাছ রোপণ করেছিলেন উদ্যোক্তা মিঠু। প্রায় দেড় বছরের মাথায় থোকা থোকা কমলা ধরেছে গাছে। তবে এ বছর কমলা বাজারে বিক্রি করতে পারছেন না। কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও উত্তরাঞ্চলে কমলা চাষে অপার সম্ভাবনা দেখছেন।
নাটোরের সিংড়ার কমলা চাষি মাসুদ করিম মিঠু ১৬০টি দার্জিলিং, সাদকি, ম্যান্ডারিন ও নাকপুরি জাতের কমলা গাছ রোপণ করেছিলেন। দেড় বছরের মাথায় প্রতিটি গাছে কমলা ধরা শুরু হয়েছে। সিংড়ার সমতল ভূমিতে এত সুন্দর সুমিষ্ট কমলা হবে তা তিনি কল্পনাই করেনি। প্রথমবারের মতো এই অঞ্চলে কমলা চাষে অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। মিঠু পাটকোল গ্রামের মো. আ. লতিফের ছেলে। গতবছর শুরুর দিকে নীলফামারী, চুয়াডাঙ্গা ও ঠাকুরগাঁও থেকে গাছগুলো সংগ্রহ করেন কৃষি উদ্যোক্তা মিঠু।
সরেজমিনে সিংড়া পৌর শহরের পাটকোল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় চার বিঘা জমিজুড়ে শোভা পাচ্ছে ১৬০টি কমলাগাছ। সেই গাছগুলোতে বিভিন্ন জাতের কমলা আসা শুরু হয়েছে। উদ্যোক্তা মাসুদ করিম মিঠুর ধান-চালের ব্যবসা ছিল। করোনায় ব্যবসা মন্দা হলে ইউটিউবে ভিডিও দেখে মিলের সমতল ভূমিতে তিনি এ গাছ রোপণ করে। এ ছাড়া, তার সম্মিলিত বাগানে রয়েছে পেয়ারা, বড়ই, পেঁপে, আম, আঙ্গুর, বেগুন, মরিচ, টমেটো, ফুলকপি, চাল কুমড়াসহ বিভিন্ন ফল ও সবজি গাছ।
কৃষি উদ্যোক্তা মাসুদ করিম মিঠু বলেন, ছোটবেলা থেকে কৃষির প্রতি ভালবাসা থেকেই এ বাগানের শুরু। করোনায় ধান-চালের ব্যবসা মন্দা গেলে ইউটিউবে কমলা চাষের বিভিন্ন ভিডিও দেখে ইচ্ছেশক্তি বৃদ্ধি পায়। কৃষি অফিসের পরামর্শে মিলের জায়গায় ১৬০টি গাছ দিয়ে শুরু করেছি। সমতল ভূমিতে কমলা চাষ খুবই অসম্ভব ও চ্যালেঞ্জিং ছিল। বাগান করতে এ পর্যন্ত প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। গাছগুলোতে জৈব সার ব্যবহার করা হয়। এখন অনেক ভালো লাগে। একেকটি গাছ দেখলে মনপ্রাণ জুড়িয়ে যায়। যখন দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন কমলা বাগান দেখতে আসে তখন নিজেকে সফল মনে হয়।
মিঠুর মিশ্র বাগানে সবসময় সহযোগিতা করেন তার সহধর্মিনী পিনাকী প্রামাণিক। তিনি বলেন, আমরা প্রথমে অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়েই শুরু করেছিলাম। তবে এখন ভালো লাগে। এ বাগানেই কাটে আমাদের অধিকাংশ সময়। কমলা চাষ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষিক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে। কমলার স্বাদ মানুষ এ দেশ থেকেই পাবে। কমলা চাষে খরচ অত্যন্ত কম।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সেলিম রেজা জানান, পাহাড়ি ফল কমলা সিংড়া উপজেলায় চাষাবাদ শুরু হয়েছে। মিঠু এই ফল চাষ করে সফলতার অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছেন। কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে শুরু করেছিলেন তিনি, বর্তমানে তার গাছে কমলা ধরা শুরু হয়েছে। পরিকল্পিত উদ্যোগে চাষাবাদ করা গেলে কমলাও হতে পারে সমতলের চাষিদের অন্যতম লাভজনক একটি ফল। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা কমলা চাষিদের নানা পরামর্শসহ সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে থাকে।
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়