বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||
বৈশাখ ১২ ১৪৩১
|| ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারি ২০২০
আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়রপ্রার্থী হিসেবে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার পরই তাবিথ আউয়ালকে নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক বিতর্ক। বিশেষ করে প্যারাডাইস পেপার্সের মতো দুর্নীতির দলিলে তার ও তার পরিবারের নাম থাকায় প্রথমেই প্রশ্নের মুখে পড়েন তাবিথ। নির্বাচিত হলে দুর্নীতি দমন করবেন- এমন প্রতিশ্রুতি দিলেও নিজের দুর্নীতির বিষয় নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি তিনি। এরইমধ্যে তাবিথকে ঘিরে সাধারণ জনগণের মধ্যে শুরু হয়েছে নতুন সংশয়।
রাজনৈতিক পরিচয়হীন হয়েও ২০১৫ সালে টাকার জোরে মনোনয়ন বাগিয়ে নেন বিএনপির ব্যাংক খ্যাত দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ। তাবিথ যে ধরনের বিলাসী জীবনযাপন করেন, তাতে তিনি আদৌ জনগণকে সেবা দিতে পারবেন কিনা- তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তার ঘনিষ্ঠজনরাই।
তাবিথের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, তিনি ছোটবেলা থেকেই বড় হয়েছেন বিদেশে। বাবার দুর্নীতির টাকায় পড়াশোনাও করেছেন দেশের বাইরের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি কীভাবে এতবড় শহরের এতগুলো খেটে খাওয়া মানুষের দুঃখ-কষ্ট অনুধাবন করবেন? সাধারণ মানুষের সঙ্গে যার সম্পৃক্ততা নেই বললেই চলে তার জনহিতৈষী অঙ্গীকারে সন্দিহান নগরের সাধারণ মানুষ।
বর্তমানে তাবিথ ও তার পরিবার স্ক্যান সিমেন্ট, রিরোলিং, টেক্সটাইল এবং ব্যাংক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার অফিসের কর্মীরা জানান, সারাজীবন বাবার টাকায় চলেছেন তিনি। বিলাসবহুল বাড়ি থেকে এসি গাড়িতে করে নিয়মিত অফিসে আসেন। আবার সেই বিলাসী গাড়িতেই বিকেলে ফিরে যান। পথে গাড়ি থেকে নামা তো দূরের কথা গাড়ির গ্লাস নামিয়ে বাইরে কখনো তাকিয়েছেন কিনা সন্দেহ! এমন একজন মানুষ নগরীর মানুষকে কী সেবা দিতে পারবেন- সেটা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, যিনি বাবার সম্পদকে আশ্রয় করে থাকেন। বাবার গড়া অফিসে বসেন। বাড়তি কোনো চিন্তা করতে পারেন না। তিনি এতবড় শহরের দায়িত্ব কীভাবে নেবেন?
এদিকে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাবিথকে সর্বশেষ ২০১৫ সালের সিটি নির্বাচনে দেখেছিলেন তারা। এরপর আবার সম্প্রতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠে নেমেছেন। কিন্তু মাঝখানে পাঁচ বছর দেখা মেলেনি তার। এমনকি কেউ কোনও সমস্যা নিয়ে সঙ্গে দেখা করতে গেলেও তিনি দেখা দেন না।
গুলশান সিটি করপোরেশন মার্কেটের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমি একবার একটি সমস্যার কারণে তার সঙ্গে দেখা করতে যাই। ছয়-সাতদিন তার অফিসে গিয়েছি। কিন্তু তার দেখা আর পাইনি। বিভিন্ন সময়ে ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে তার লোকজন ফিরিয়ে দিতো। তিনি কখনো মানুষের সংস্পর্শে আসে না।’
অপরদিকে একই মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, অল্প সময় ধরে মেয়র নির্বাচিত হলেও তাদের সুখে-দুঃখে সবসময়ই পাশে ছিলেন বর্তমান মেয়র ও ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। এর আগে মার্কেটে আগুন লাগলে তিনি সার্বক্ষণিক তাদের সঙ্গে থেকে সহযোগিতা করেছেন। এমনকি এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজ-খবর রাখেন। সে তুলনায় তাবিথ আউয়ালের উপর ভরসা করতে পারছেন না কেউই।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে প্রকাশিত প্যারাডাইস পেপার্স কেলেঙ্কারিতে তাবিথ আউয়াল ও তার পরিবারের কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের মতো গুরুতর অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরেও কেন বিতর্কিত তাবিথ আউয়ালকে পুনরায় মনোনয়ন দিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সেটি দলটির নেতা-কর্মী তথা দেশবাসীর কাছে বোধগম্য নয়।
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়