শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||
চৈত্র ১৫ ১৪৩০
|| ১৯ রমজান ১৪৪৫
আজকের নাটোর
প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০২০
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আব্দুল মাজেদকে ফাঁসির মঞ্চে নেওয়ার আগে গোসল করিয়ে শেষবারের মতো খাবার খাওয়ানো শেষ হয়েছে।
শনিবার (১১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টায় কারাগারের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সন্ধ্যার পর গোসল সারেন মাজেদ, তারপর রাত সাড়ে ৮টায় এশার নামাজ শেষ করেন। পরে তাকে শেষবারের মতো রাতে খাবার দেওয়া হয়।’
ফাঁসির মঞ্চে নেওয়ার আগে মাজেদকে তওবা পড়ানো হয়েছে। কারা মসজিদের ইমাম আব্দুল মাজেদকে তওবা পড়িয়েছেন। এসময় চিৎকার করে কেঁদেছেন মাজেদ।
সূত্রটি আরো নিশ্চিত করেছে সবকিছু ঠিক থাকলে রাত ১২টা ১ মিনিটে এই খুনির ফাঁসি কার্যকর করা হবে।
খুনি মাজেদের ফাঁসির পর তার মরদেহ যাবে ভোলার বোরহানউদ্দিনে। ইতিমধ্যে লাশ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স ভিতরে প্রবেশ করেছে। তবে ভোলা থেকে তার লাশ দাফনের জন্য দেবে না এলাকাবাসী এমন দাবি উঠেছে। এ নিয়ে বিপাকে রয়েছে কারা কতৃপক্ষ। তবে কারা কর্তৃপক্ষ বিশেষ ব্যবস্থায় ভোলায় লাশ পাঠাবে। লাশ দাফনে জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনকে।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিগত দুই দশক পালিয়ে ভারত গিয়েছিলেন আবদুল মাজেদ। গত মার্চের মাঝামাঝি সময় তিনি ঢাকায় আসেন। পরে সোমবার (৬ এপ্রিল) রাত ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের সামনে থেকে মাজেদকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ৪৪ বছর ৭ মাস ২১ দিন পর গ্রেপ্তার হন তিনি। সবশেষ শুক্রবার স্ত্রীসহ পাঁচজন কারাগারে মাজেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ফাঁসির আগে প্রত্যেক আসামিকে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়।
গত বুধবার ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এম হেলাল উদ্দিন চৌধুরী মাজেদের মৃত্যু পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। ওইদিন বিকেলে মাজেদ রাষ্ট্রপতির কাছে এ আবেদন করেন। কারা কর্তৃপক্ষ আবেদনটি বিকেলেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে বঙ্গভবনে পৌঁছানো হয়। প্রাণভিক্ষার আবেদনটি বঙ্গভবনে পৌঁছার পরপরই তা খারিজ করে দেন রাষ্ট্রপতি। এটি প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় কারা কর্তৃপক্ষের সামনে দণ্ড কার্যকরে বাধা থাকছে না।
এর আগে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আবদুল মাজেদসহ ১২ আসামিকে ২০০৯ সালে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ ও মুহিউদ্দিন আহমেদের ফাঁসি ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি কার্যকর হয়।
রায় কার্যকরের আগে ২০০২ সালে পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যান আসামি আজিজ পাশা। মাজেদ গ্রেফতার হওয়ার পর বর্তমানে পলাতক রয়েছেন পাঁচজন। পলাতক আসামিরারা হলেন- খন্দকার আবদুর রশীদ, শরিফুল হক ডালিম, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, এ এম রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেম উদ্দিন। তারা সবাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা। তারা বিভিন্ন দেশে পলাতক পালিয়ে আছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মম বর্বরোচিত ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তখন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী) ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাড়িতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকান্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন এই মাজেদ। তখন তিনি ছিলেন সেনাবাহিনীর একজন জুনিয়র কর্মকর্তা।
ajkernatore.com
সর্বশেষ
জনপ্রিয়